আবু সাঈদ হত্যা: বেরোবিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দল

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তদন্ত করতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) এসেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ১২ সদস্যের একটি দল। এ দলের নেতৃত্ব দেন প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার ময়নুল করিম।

শহীদ আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন, প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন দলটির সদস্যরা।

এর আগে, সকাল ৯টার দিকে বেরোবির সামনে শহীদ আবু সাঈদ চত্বরে আসেন তদন্ত দলের সদস্যরা। তারা গত ১৬ জুলাই যেখানে পুলিশ আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করে, সেই স্থান পরিদর্শন করেন। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া গুলি করার দৃশ্যের ভিডিও দেখে দেখে বিভিন্ন স্পট পরিদর্শন করেন।

এ সময় প্রত্যক্ষদর্শী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাওহীদুল হক সিয়াম ও আরমান হোসেন তদন্তকারী দলকে ঘটনার সময়ের সার্বিক বিষয়ে অবহিত করেন। এরপর তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকত আলীসহ প্রত্যক্ষদর্শী ও অন্যদের দিনভর জবানবন্দি গ্রহণ করেন।

পরিদর্শন শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার এসএম ময়নুল করিম বলেন, “বেরোবি শিক্ষার্থী শহীদ আবু সাঈদসহ বৃহত্তর রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। শহীদ আবু সাঈদের নিহত হওয়ার ঘটনাটি সারা দেশ, এমনকি বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। সেজন্য এ হত্যাকাণ্ডকে আমরা অগ্রাধিকার দিয়েছি।”

তিনি বলেন, “এক সপ্তাহ আগে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা আমলে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছি। তারই অংশ হিসেবে যেখানে আবু সাঈদকে হত্যা করা হয়েছে, সেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন, তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ, ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী যারা ছিলেন, তাদের জবানবন্দি গ্রহণসহ সার্বিক কার্যক্রম করা হচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “চিফ প্রসিকিউটরের নির্দেশে আমরা নয়জন তদন্তকারী ও তিনজন নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ ১২ জন এসে তদন্ত করছি। গুরুত্বের সঙ্গে আবু সাঈদের হত্যার বিষয়টি দেখা হচ্ছে। আমরা নিশ্চিত হওয়ার পরেই হত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করব।”

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর বলেন, “আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দণ্ডবিধি আইনে মামলা হয়েছে। সেটা হলেও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল আইনেও মামলা করতে কোন বিধি-নিষেধ নেই। যত দ্রুত সম্ভব, এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

গত ১৬ জুলাই বেরোবির ১ নম্বর ফটকের সামনে আবু সাঈদ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।