জামালপুর সদর উপজেলার গ্রাম পর্যায় থেকে বয়সভিত্তিক বিশেষ করে ১০ থেকে ১৫ বছরের শিশু ছেলেমেয়ে খেলোয়াড় বাছাই ও তাদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে জামালপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থা। জামালপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার (ডিএসএ) উপদেষ্টা ও জামালপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও অনুপ্রেরণায় ভালোমানের খেলোয়াড় তৈরির লক্ষ্যে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে জামালপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থা (ডিএসএ)।
ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল, হ্যান্ডবল, কাবাডি, কারাতে ও রোলার স্কেটিং এই সাতটি বিষয়ে খেলোয়াড় বাছাই ও অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকদের দিয়ে খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জেলা ক্রীড়া সংস্থা নিশ্চিত করেছে।
এ উপলক্ষে জামালপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাকক্ষে ১২ মে সন্ধ্যায় খেলোয়াড় প্রশিক্ষণ কর্মসূচি নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জামালপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মির্জা জিল্লুর রহমান শিপন। সভায় অংশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত দেন ডিএসএ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও হ্যান্ডবল প্রশিক্ষক মো. রজব আলী, ডিএসএ কোষাধ্যক্ষ আইনজীবী নূরন নবী ভূঁইয়া অপু, হ্যান্ডবল উপ-পরিষদের আহ্বায়ক ও ডিএসএ সদস্য মো.শফিকুল ইসলাম, জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ফুটবল প্রশিক্ষক মাকসুদুল আমিন রানা, ডিএফএ কোচ ফেরদৌস হোসেন লিটন, হ্যান্ডবল উপপরিষদের সদস্যসচিব ও ডিএফএ সদস্য মো. আকতারুজ্জামান আউয়াল, অ্যাথলেটিক প্রশিক্ষক ও ডিএসএ সদস্য মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন, ক্রিকেট প্রশিক্ষক ও ডিএসএ সদস্য মো. মিজানুর রহমান মিজু, ক্রিকেট প্রশিক্ষক সাব্বির হোসাইন শ্যামল, ডিএসএ সদস্য ও ফিফা রেফারি মো. শাহ আলম, কারাতে প্রশিক্ষক ফিরোজ আলম ও সহকারী প্রশিক্ষক আহসান উল্লাহ আজাদ প্রমুখ।
সভা সূত্রে জানা গেছে, ভালোমানের খেলোয়াড় তৈরির লক্ষ্যে জামালপুর সদর উপজেলার গ্রাম পর্যায় থেকে বয়সভিত্তিক বিশেষ করে ১০ বছর থেকে ১৫ বছরের শিশু ছেলেমেয়ে খেলোয়াড় বাছাই ও তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল, হ্যান্ডবল, কাবাডি, কারাতে ও রোলার স্কেটিং এই সাতটি বিষয়ের প্রতিটিতে ২৫ জন করে আগ্রহী খেলোয়াড় বাছাই করা হবে।
সভায় জানানো হয়, খেলোয়াড় বাছাইয়ের জন্য জামালপুর পৌরসভা ও জামালপুর সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের কেন্দুয়া কালিবাড়ী, রানাগাছা ইউনিয়নের নান্দিনা, গোপালপুর শ্রীপুর ও শাহবাজপুর ইউনিয়ন এই সাতটি স্থানে পর্যায়ক্রমে দিনব্যাপী খেলোয়াড় বাছাই ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালানো হবে। জেলার অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকদের পাশাপাশি গ্রাম পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দু’জন করে শিক্ষককেও প্রশিক্ষক হিসেবে রাখা হবে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য খসড়া বাজেট নিয়েও সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সভায় আরো জানানো হয়, দ্রুত সময়ের মধ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ে আগ্রহী খেলোয়াড় বাছাই ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের সময় সময়সূচি তৈরি করে কার্যক্রম শুরু করা হবে।
এ প্রসঙ্গে জামালপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মির্জা জিল্লুর রহমান শিপন এ প্রতিবেদককে বলেন, এই খেলোয়াড় প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটা জামালপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদের ব্যক্তিগত অনুপ্রেরণায় আমরা হাতে নিয়েছি। নির্বাচনের আগে তার প্রতিশ্রুতি ছিল যে জামালপুরে ক্রীড়াঙ্গনকে স্মার্ট ক্রীড়াঙ্গন হিসেবে গড়ে তুলবেন। তার সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই একদম তৃণমূল পর্যায়ে খেলাধুলাকে নিয়ে যাওয়া জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। বাংলাদেশে এটাই প্রথম। এর আগে জেলা ক্রীড়া সংস্থার ব্যানারে তৃণমূল পর্যায়ে খেলোয়াড় তৈরি করার জন্য এমন উদ্যোগ কোথাও দেখা যায়নি। এই যে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছি এটাই প্রথম বাংলাদেশে।
মির্জা জিল্লুর রহমান শিপন আরো বলেন, জেলা, বিভাগীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বয়সভিত্তিক খেলোয়াড় তৈরিই হবে এই প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য। এ জন্যই ১০ থেকে ১৫ বছরের ছেলে-মেয়েরা সম্পূর্ণ বিনা খরচে এই প্রশিক্ষণের আওতায় থাকবে। জামালপুর সদরের সাতটি স্থানে আগ্রহী খেলোয়াড় বাছাই ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই এই কার্যক্রমের সময়সূচি প্রকাশ করা হবে। ভালোমানের খেলোয়াড় তৈরির লক্ষ্যে জামালপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার উদ্যোগে এই কার্যক্রম বছরের পর বছর চলতেই থাকবে।
সূত্র: বাংলারটিঠিডটকম